আবুল হোসেন, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার বৃহত্তর দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রির দুই দিন পর খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের তৎপরতায় এক তরুনী (১৮) কে উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া তরুনীকে বিউটি পার্লারে চাকুরী দেবার কথা বলে নিয়ে আসে একটি চক্রের তিন সদস্য। তরুনীকে উদ্ধারের পর চক্রের তিন সদস্যকেও গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন, দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর বাড়িওয়ালী নাজমা বেগম (৫৫), নাটোরের লালপুর থানার গোদরা গ্রামের মৃত কামাল উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম (৩০) ও ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার মোস্তাক আহম্মেদ এর ছেলে সাগর আহম্মেদ (৩০)। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্ধার হওয়া অসহায় তরুনী নিজে বাদী হয়ে সোমবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় আটককৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা দায়ের করেন।
উদ্ধার হওয়া তরুনী বলেন, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার দরিদ্র ঘরের ওই তরুনী অভাব অনাটনের কারণে চার মাস আগে সাভারের জামগড়া এলাকার একটি দোকানে শ্রমিকের কাজ নেন। দোকানে থাকার সুবাদে আব্দুল মান্নান (২৫) নামের এক তরুণের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের জের ধরে আমার অভাবের কথা শুনে আামকে বিউটি পার্লারে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে। ভালো বেতনে চাকুরীর কথা ভেবে আমি বিশ্বাস করে রাজি হয়ে যাই। পরবর্তীতে আমকে বাসযোগে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে আসতে বলে। কথা মতো আমি ১৩ নভেম্বর সকালে রওনা হয়ে দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌছে মান্নানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করি। পরে মান্নান আমার সাথে দেখা করে হোটেলে দুপুরের খাবার শেষে কিছু সময় ঘোরাফেরা শেষে বিকেলে যৌনপল্লীর নাজমা বেগমের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে একটি রুমে আটকে রেখে রেজাউল ও সাগরের সাথে মান্নানের আলাপ কালে আমি বুঝতে পারি এটা নিষিদ্ধপল্লী। এসময় ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নাজমা বাড়ীওয়ালির কাছে মান্নান আমাকে বিক্রি করে দেয়। পরে আমাকে আটকে রেখে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করায়। দুইদিন পর রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে আমি যৌনপল্লী থেকে সুযোগ বুঝে পালানোর চেষ্টা করি। এসময় নাজমাসহ তাদের লোকজন আমাকে আটকের চেষ্টা করলে চিৎকার করে আশপাশের লোকজন তাদের আটক করে। তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে। একই সাথে নাজমা বেগম, রেজাউল করিম ও সাগরকে আটক করে। আব্দুল মান্নান কৌশলে পালিয়ে যায়।
গোয়ালন্দঘাট থানার (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, উদ্ধার হওয়া তরুনীকে ডাক্তারি পরীক্ষা করতে সোমবার রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এছাড়া কোর্টের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের রাজবাড়ীর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে ও পলাতক আসামীদের গ্রোপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।