ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ৫৩৭ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের অধীন নয়টি ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এসব ভবন নির্মাণে প্রায় দেড় হাজার গাছ কাটা হবে। ফলে একদিকে যেমন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য হারাবে অন্যদিকে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মনে করেন।
পরিকল্পনা উন্নয়ন ও প্রকৌশল অফিসের তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৭ কোটি টাকার প্রকল্পের অধীনে ভবন নির্মাণের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুত কয়েকটি ভবনের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে শিগগির দুটি হলের নির্মাণকাজ শুরু হবে। উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ১০ তলাবিশিষ্ট চারটি আবাসিক হল, একটি হলের দ্বিতীয় ফেজ, ১০তলাবিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবন এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি করে ১০ তলাবিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। নির্মাণকাজ শুরুর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রায় দেড় হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকৌশল অফিসের চাহিদা মোতাবেক রেজিস্ট্রি অফিস গাছ কাটার নির্দেশনাও দিয়েছেন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবনসহ প্রায় ৩৫ এর অধিক ভবন রয়েছে। যেখানে প্রায় সাত হাজার মানুষের আবাসন ও পদচারণা রয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসে নিয়মিত ১৬ হাজারের অধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদচারণা রয়েছে। একটি জনপদের মোট ভূমির ২৫ শতাংশ বনায়ন প্রয়োজন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বনভূমির পরিমাণ কমে দাঁড়াবে ১০ শতাংশেরও নিচে।
এদিকে শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চার দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি ও বিবৃতি দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। এছাড়া দুই দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রিন ভয়েস।
এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক জি কে সাদিক বলেন, মেগা প্রজেক্টের প্ল্যানিং পরিকল্পিতভাবে করা হলে এতো সংখ্যক গাছ কাটা পড়তো না। দুর্বল ও ত্রুটিপূর্ণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রশাসন মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও বনায়ন ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে।
অন্যদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে। আরও চার হাজার গাছ লাগানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিকল্পিত বনায়ন গড়ে তুলতে একটি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, জনসংযোগ অফিসের উপ-পরিচালক মো. আতাউল হক উপস্থিত ছিলেন।