ঢাকা অফিস: জমে উঠছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় আয়োজন শারদীয় দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনের এ উৎসবের দ্বিতীয় দিন গতকাল মঙ্গলবার মহাসপ্তমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে পূজারি ও দর্শনার্থীর ভিড় বেড়েছে। আজ বুধবার মহাঅষ্টমী থেকে পূজারি ও দর্শনার্থীদের ভিড় আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতকাল মহাসপ্তমীর সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হয়। সকাল ৭টা ৩২ মিনিটের মধ্যে শুরু হয় দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন ও সপ্তম্যাদি কল্পারম্ভ। এর পর দেবীর সপ্তমীবিহিত পূজা শেষে আয়োজন করা হয় পুষ্পাঞ্জলি ও ভোগ আরতি।

এদিন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে মুক্তি পেতে অনেক মণ্ডপ-মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। করোনার কারণে বিশেষ সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দর্শনার্থী ও পূজারিদের পূজা উপভোগ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ মণ্ডপ-মন্দিরে মাস্ক এবং হ্যান্ড সানিটাইজার রাখা হয়েছে। কোথাও কোথাও বেষ্টনীর কড়াকড়ি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মণ্ডপে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পূজামণ্ডপসহ রাজধানীর কয়েকটি পূজামণ্ডপ ঘুরে দুর্গাপূজার চিরাচরিত উৎসবমুখর আমেজ ফিরে আসতে দেখা গেছে। কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপ হিসেবে পরিচিত ঢাকেশ্বরী মেলাঙ্গনের এই পূজামণ্ডপে দিনভর অনেক দর্শনার্থী ও পূজারির আগমন ঘটে। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে র‌্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকেশ্বরী মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল মন্দিরেও ছিল উৎসবের ছোঁয়া। গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের পূজামণ্ডপ, রমনা কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির ছাড়াও হিন্দু অধ্যুষিত পুরান ঢাকার মন্দির-মণ্ডপেও আনন্দমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। এবার ঢাকা মহানগরীর ২৩৭টিসহ সারাদেশের ৩২ হাজার ১১২টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

দুর্গাপূজার তৃতীয় দিন আজ বুধবার মহাঅষ্টমী ও সন্ধিপূজা। মহাঅষ্টমীতে আজ সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে দেবীর মহাঅষ্টমী কল্পারম্ভ ও মহাঅষ্টমীবিহিত পূজা শুরু হয়। এর পর পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে শুরু হবে সন্ধিপূজা। রামকৃষ্ণ মিশন-মঠসহ কয়েকটি পূজামণ্ডপে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকামতে দুর্গাপূজা আয়োজনের কারণে এসব মণ্ডপে পূজার সময়ের হেরফের ঘটবে কিছুটা। তবে করোনার কারণে ভিড় এড়াতে মহাঅষ্টমীতে এবার ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে কুমারী পূজা এবং মহাপ্রসাদ বিতরণ হচ্ছে না। অবশ্য ঢাকার বাইরের কয়েকটি রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে কুমারী পূজার আয়োজন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *