নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেছেন বাল্যবিয়ে নিরোধে যে আইন রয়েছে তা যথেষ্ট। এই আইন কার্যকরের ফলে সামগ্রিক অর্থে দেশে আগের চেয়ে অনেক কমেছে এর প্রবণতা। কিন্তু কুষ্টিয়াসহ কিছু কিছু এলাকায় এর প্রবণতা রয়ে গেছে। তবে শুধু আইন দ্বারা বাল্যবিয়ে নিরোধ সম্ভব নয়। কি কারনে সমাজে এই প্রবণতা বাড়ছে সেই কারনগুলো চিহ্নিত করে কার্যকর পদক্ষেপ নিলেই অনেকাংশে কমে আসবে বাল্যবিয়ের প্রবণতা।

তিনি গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরাম ডিপিএফ কুষ্টিয়ার আয়োজনে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ডিপিএফ কুষ্টিয়ার সভাপতি মাহবুবা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মৃণাল কান্তি দে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) শারমিন আখতার, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস।

বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে মৃণাল কান্তি দে বলেন বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজে বাল্যবিয়ের অন্তরায় কারা, কারাইবা এর পৃষ্টপোষক এবিষয়ে তিনি বলেন বাল্যবিয়ে নিরোধে অন্তরায় সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃত্ব। তাদের পৃষ্টপোষকতায় অনেকাংশ বাল্যবিয়ে হয়ে থাকে। তাঁদের হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন বাল্যবিয়ের পৃষ্টপোষকতার প্রমাণ মিললে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তিনি এও বলেন বাল্য বিয়ে বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারে ভুক্তভোগী নিজেই। দেশে এমন অনেক নজির রয়েছে বাবা মা কিংবা পরিবার থেকে বাল্যবিয়ে চাপিয়ে দেয়ার পরও নিজের কঠোর অবস্থানের কারনে তা বন্ধ হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এমন সংবাদ উঠে এসেছে। সব মেয়েই যদি এমন প্রতিবাদী হয় সেক্ষেত্রে অনেকাংশে কমে আসতে পারে বাল্যবিয়ের প্রবণতা।

ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরাম কুষ্টিয়ার সম্পাদক আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিপিএফ কুষ্টিয়ার সভাপতি মাহবুবা বেগম। পজিশন পেপার উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ^বিদ্যালয়ের গবেষক ও কর্মকর্তা ইমাম মেহেদী। তিনি কুষ্টিয়া তথা আশপাশ এলাকায় বাল্যবিয়ের কারণ ও নিরোধের অন্তরায় কি, এমনকি এথেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে তথ্যভিত্তিক বিষয় তুলে ধরেন।

পরবর্তি অংশে বাল্যবিয়ের প্রেক্ষাপট ও ভূমিকা তুলে ধরে সংলাপে অংশ নেন চ্যানেল ২৪’র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শরীফ বিশ^াস, দৈনিক দর্পণ পত্রিকার সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক মজিবুল শেখ, এনটিভি প্রতিনিধি সাবিনা ইয়াসমীন শ্যামলী, অ্যাড. পিএস সিরাজ প্রামাণিক, জেলা কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, বাল্য বিয়ের শিকার এবং প্রতিরোধে জয়ি দু’জন স্কুলছাত্রী।

এর পর মুক্ত আলোচনায় জেলার সার্বিক বাল্যবিয়ে পরিস্থিতি এবং করণীয় বিষয় তুলে ধরে কথা বলেন সংলাপে অংশগ্রহনকারীগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *