আবুল হোসেন, রাজবাড়ী প্রতিনিধি : “নদীর এ কুল ভাঙ্গে ঐ কুল গড়ে এইতো নদীর খেলা” তেমনি কয়েক বছর ধরে মূল ভুখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলো রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার চর কর্ণেশন,মহিদাপুর, মজলিশপুর কন্ঠাদিয়া মৌজা। ১৯৭৩ সালে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে কয়েকটি মৌজা ভেঙ্গে বিলিন হয়ে যায়।দীর্ঘ দিন নদী গর্ভে থাকার পর ৯০ দশকে পুনরায় চরের জমি জেগে উঠে ধুধু বালুর মাঠ হয়ে। বালুর চরে কাশবন ছাড়া আর কিছুই ছিলো না। বর্ষায় নতুন পানি এসে ধীরে ধীরে বালুর চরে পলি মাটি পড়ে।
পদ্মার চরে শুরু হয় নানা ফসলের আবাদ। নতুন করে আশার আলো দেখে চরের হাজার হাজার কৃষক।

পদ্মা নদীর ভাঙনে কয়েকটি মৌজা বিলীন হয়ে যায়। পরে সেখানে চর জেগে উঠলেও কোন চাষাবাদ না হওয়ায় কাজে আসত না মানুষের। দুর্গম সেই চর এখন সবুজে ঘেরা ফসলের হাসি।

নদী ভাঙ্গনে এক সময় বিচ্ছিন্ন এ চরে এখন যতদূর চোখ যায় কেবল সবুজ আর সবুজ। কেউ যেনো নিজ হাতে সবুজের গালিচা বিছিয়েছে। দুর্গম এই পদ্মার চর এখন ধান,গম, ভুট্টা, কলা,বাদাম,টমেটো, বেগুন, লেবু সহ নানা রবি ফসলে ছেয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় চর কর্ণেশন, মহিদাপুর, মজলিশপুর, মহিদাপুর সহ কয়েকটি মৌজার জমি এবারে আবাদের আওতায় এসেছে।

চর কর্ণেশন মৌজায় কৃষক মো. রহম আলী মোল্লা বলেন, চরের নতুন মাটিতে ফসল খুব ভালো হয়। আমি ৫০ বিঘা জমিতে বোরোধান,নেপি আউশ ধান চাষ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে ভাগভাগি নিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলবো। এভাবে প্রতি বছর চরে ফসল হলে চরের মানুষের আর অভাব থাকবে না।

রমজান মোল্লা নামের আরেক কৃষক বলেন, বর্ষায় পানি আসলে চরের নিচু এলাকা ডুবে যায়। শুকনো মৌসুমে পানি শুকিয়ে আসলে আবার আমরা বিভিন্ন মৌসুমি ফসলের চাষ করি। গত বছর আমি পাঁচ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছিলাম। নতুন মাটিতে ভালো ফলন হয়ছিলো। এবার ইরি ধান লাগিয়েছি।

স্থানীয় জাবেদ আলী বলেন, নদী ভাঙ্গনে চর বিলিন হয়ে যাওয়ার পর থেকে জমির খাজনা বন্ধ রয়েছে। কিছু মানুষ জোর করে জমি দখল করছে। পূর্বের এস,এ এবং আর, এস এর মালিকানা ধরে পুনরায় খাজনা নিলে স্বস্ব মালিক গন জমির মালিকানা স্বত্ব ফিরে পাবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জমান বলেন,নতুন মাটিতে ধান , গম, মশুর , ভুট্টা,টমেটো, বেগুন,কলা সহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল উৎপাদন ভালো হয়। এবার এই চরাঞ্চলে বোরো ৩২৬০ হেক্টরে, টমেটো ৩২০ হেক্টর, বেগুন ৮৪০ হেক্টর,ইরি ধান সহ সকল রবিশস্য উৎপাদন হচ্ছে। এভাবে চরে অঞ্চলে ফসলের ফলন হলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *