নিজস্ব প্রতিবেদক॥ কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং ডি-ব্লকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি কার্যালয় সংলগ্ন একটি নির্মাণাধীন ৪তলা ভবনের ২য় তলায় নিজ বাড়িতে বসবাসরত গৃহকত্রী শেফালী রানী বিশ^াস (৫৫) কে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও গলায় ফাঁসদিয়ে শ^াসরুদ্ধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে সুরতহাল প্রস্তুত পূর্বক নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।
নিহতের ভাইপো রাজিব বিশ^াসের অভিযোগ, স্বয়ং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির কার্যালয় সংলগ্ন এই বাড়িতে হঠাৎ করে বাইরের কোন লোক এসে বাড়িতে ঢুকে লকার খুলে স্বর্নালঙ্কার ও নগদ টাকা চুরি করতে আসবে না। বরং যারাই পরিকল্পিত এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তার মূলত পূর্ব থেকেই শেফালী রানীর পরিচিত এবং তারা ওই বাড়ির মধ্যেই পূর্ব থেকে অবস্থান করছিলো। তাদের চুরির দৃশ্য দেখে ফেলায় প্রত্যক্ষদর্শী শেফালী রানীকে তারা হত্যা করেছে। ঘটনার সময় ওই বাড়িতে অবস্থান করছিলো- ৮/১০জন নির্মান শ্রমিক, আমার পিসি শেফালী রানী এবং পিসে মশায় আনন্দ কুমার বিশ^াস।”
ঠিক একই ধরনের সন্দেহের কথা জানাচ্ছিলেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের উপ সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মঈন হোসেন। তিনি বলেন, ‘শেফালী রানীকে হত্যাকান্ডে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা ওই বাড়ির মধ্য থেকেই ঘটে থাকতে পারে। হঠাৎ করে বাহিরের কোন অপরিচিত অপরাধচক্র এখানে এধরনের অপরাধ সংঘটনের কথা চিন্তাও করবেনা।”
নিহত শেফালী রানী বিশ^াস বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে চাকরী শেষে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনন্দ কুমার বিশ^াসের স্ত্রী এবং কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং ডি-ব্লকের ২৭৫নং নিজ বাড়ির ২য় তলার বাসিন্দা। নিহতের পিতা মিরপুর উপজেলার পোড়াদাহ গ্রামের বাসিন্দা মৃত: রঞ্জিত কুমার বিশ^াস এবং তার স্বামী আনন্দ কুমারের পৈত্রিক ভিটা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে। ২০১৫সালে চাকরী থেকে অবসর নিয়ে তিনি এখানে বাড়ী তৈরী করে বসবাস করছিলেন। নিহতের দাম্পত্য জীবনে এক কণ্যা শহরের আড়–য়াপাড়া এলাকার শতদ্বীপ সরকারের স্ত্রী ঋতুপর্না বিশ^াস।
নিহতের সুরৎহাল প্রস্তুতকারী মডেল থানার উপপুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুজ্জামান বলেন, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত নীলাভ ও জখম আছে। বেশী আঘাতপ্রাপ্ত স্থান হলো নিহতের ঘারের পিছন দিকে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল আলাম জানিয়েছেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। কিন্তু ঠিক কিকারণে বা কে বা কারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছেন। তবে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে যারাই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তারা নিহতে পূর্ব পরিচিত। এঘটনায় যারায় জড়িত থাক দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে আদালতে সৌপর্দ করা হবে।