নিজস্ব প্রতিবেদক : ৩০হাজার মানুষের বসবাস এই ইউনিয়নে। ইউনিয়নবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য গড়ে উঠে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালকলের বিষাক্ত বর্জ্য ও দূষিত পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে প্রায় বছরজুড়ে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সকল কার্যক্রমও বন্ধ প্রায়।
বলছিলাম কুষ্টিয়ার খাজানগরে চালকলের বর্জ্যের পানিতে একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চারপাশে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এ কারণে বন্ধ রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর। সেখানে দেশ এগ্রো ও ইফাদ এগ্রো নামের দুটি চালকলের বিষাক্ত বর্জ্য ও দূষিত পানিতে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির চারপাশে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে , স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুরো এলাকা বিষাক্ত বর্জ্য ও কচুরিপানায় ময়লার স্তূপে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। পাশে কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা সড়কের কুবুরহাট এলাকা দিয়ে চলাচলকারী হাজারও মানুষ বিষাক্ত পানির দুর্গন্ধে নাকে রুমাল দিয়ে চলাফেরা করছেন। ওই পানি গায়ে লেগে চর্মরোগসহ নানা অসুখ-বিসুখ দেখা দিচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে মানুষের যাতায়াত না থাকায় এটি অনেকটাই পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি,চালকল মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় সবাইকে ম্যানেজ করে চলেন তাঁরা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির চারপাশে চালকলের বিষাক্ত বর্জ্য ও দূষিত পানিতে সয়লাব থাকলেও সংশ্লিষ্ট কারো মাথাব্যথা নেই।
চালকলের বিষাক্ত বর্জ্য ও দূষিত পানিতে আশপাশের ফসলও নষ্ট হচ্ছে। আশপাশ এলাকায় বসবাসকারী লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। একটু বৃষ্টি হলেই ওই পানি উঠে যাচ্ছে সড়কে।
নাম-প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, ‘আমরা এখানে চাকরি করি। চালকল মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে তারা হুমকি-ধমকি দেন। তাই এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে পারি না।
বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন,সকালে বিষয়টি আমি দেখে এসেছি। চালকলমালিক পক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছি। তারা দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন,ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আসপাশের কয়েকটি চালকলের বর্জ্যের পানিতে তলিয়ে গেছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ আশপাশের এলাকা। আমরা বার বার পরিদর্শন করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি। তবে কাজের কাজ এখনও কিছুই হয়নি।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক আতাউর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুষ্টিয়ার পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিজানুল হক বলেন, ‘আমি স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ উপজেলা পযার্য়ের কর্মকর্তাদেরও জানিয়েছি। তবে তারা কেউই ব্যবস্থা নেননি।’
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন,খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।