নিজস্ব প্রতিবেদক : কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাকে বেঁধে রেখে তরুণীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বিয়ের কাবিননামায় সই করানোর ঘটনায় মামলার পর একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার মো. ফারুক (৪৩) মামলার ৮ নম্বর আসামি। তিনি উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।

এছাড়া, মামলার প্রধান আসামি গোলাম দস্তগীর তিতাস (৪৫) পান্টি এলাকার মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের নাতি এবং তার বাড়ি বরিশাল জেলায়। আর ভুক্তভোগী তরুণী এবছর স্থানীয় একটি কলেজ থেকে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেছেন।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলন, বাড়িতে প্রবেশ করে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তরুণীকে কাবিননামায় সই করানোর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার (১ জুন) রাতে ভুক্তভোগী তরুণীর মা ঘটনার মূল অভিযুক্ত তিতাসকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এছাড়া মামলায় আরও ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, মামলায় ফারুক নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে তিতাস বেশ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ওই তরুণীর বাড়িতে প্রবেশ করেন। এসময় তাদের হাতে পিস্তল, দা, দড়ি ছিল। এরপর তরুণীর মা ও বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়াদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তরুণীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে কাবিননামায় সই নিয়ে চলে যান তারা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণীর বুধবার বিকেলে কুমারখালী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় রাতেই থানায় মামলা রুজু হয়। মামলা দায়েরের পর রাতেই মামলার ৮নং আসামি ফারুককে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার বাদী তরুণীর মা বলেন, তিতাস স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী ভাড়া করে আমার বাড়িতে জোর করে ঢুকে আমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে বাড়ির সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর আমার মেয়ের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে কাবিননামায় সই করে নিয়ে চলে যায়। থানায় মামলা করেছি। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ২০১৬ সাল থেকে তিতাস আমাকে বিয়ের কথা বলে আসছে। মাঝেমাঝেই বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে বিয়ের কথা বলে। আমি রাজি না হওয়ায় মাকে বেঁধে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। একপর্যায়ে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয় এবং কাবিননামায় সই করিয়ে নেয়।

তিনি আরও বলেন, আর কোনো মেয়ের জীবনে ও পরিবারে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সেজন্যই সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *