আবুল হোসেন, রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া  ইউনিয়নের পদ্মা নদীর শাখা ক্যানেল ঘাট ( নুরু মন্ডল পাড়া – ইদ্রিস পাড়া)  এলাকার সাত গ্রামের মানুষের যাতায়াতের এক মাত্র ভরসা বাঁশের  সাঁকো।
সাঁকোর  মাঝে দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদীর শাখা। কাটাখালী – দৌলতদিয়া নদীর  ক্যানেল। এর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ৭টি  গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
এলাকাবাসী জানান, সাত গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের পারাপারে একমাত্র ভরসা একটি সাঁকো। প্রায় ১০ বছর ধরে এলাকাবাসী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি  মিলে  সাঁকোর বাঁশ পচে নষ্ট হলে সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করেন তারা।
প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের  ১নং বেপারি  পাড়া, সাহাজদ্দিন বেপারী পাড়া, লালু মন্ডল পাড়া, নতুন পাড়া, ইদ্রিস পাড়া, নাসীর সরদার পাড়া, ও  দেবগ্রাম ইউনিয়নের  মুন্সী বাজার এলাকা সহ ৭ টি গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। এছাড়া পার হন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কিষাণ-কিষাণী ও ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ১৫০-১৩০ ফুট দীর্ঘ সাঁকোতে চলাচলের  সময় কাঁপতে থাকে। আবার অনেক স্থানে বাশঁ-খুঁটি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ভগ্নপ্রায় সাঁকো দিয়ে কষ্টে ও সাবধানতা অবলম্বন করে পারাপার হচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে কৃষি পন্য নিয়ে কৃষক সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে পারছে না। মাঠের ফসল নিয়ে যাতায়াত করতে না পারায় তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সাঁকোটির অনেক স্থানে বাঁশ পঁচে যাওয়ার কারনে স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রীদের অনেকেরই পা আটকে আহত হয়েছেন। সাঁকোটি দিয়ে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।
সাঁকো পার হওয়া বড় সিংগা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী যুথি আক্তার বলেন, বাঁশের সাঁকোটি  নরবরে হওয়ার কারনে সাঁকো উপর দিয়ে একা চলাচল করতে পারিনা। গত বছর বন্যার সময় সাঁকো উপর থেকে পানিতে পড়ে  এক জন  শিশু  মারা গিয়েছিলো।
সাঁকো পার হওয়া ইদ্রিস  পাড়া গ্রামের আ. জলিল মুন্সী (৭০) বলেন, খালের ওপর আমাদের সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। বারবার তাগিদ দেওয়ার পর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও কোনও উদ্যোগ নেয়নি। নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচনে জেতার পর কারও আরও মনে থাকে না। সাতটি গ্রাম সহ আরো আশেপাশে কয়েক টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে এই সাঁকো দিয়ে। আমরা ভারি কোন মালামাল নিয়ে সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল করতে পারিনা।
১নং বেপারী পাড়া, সাহাজদ্দিন বেপারি পাড়া, নতুন পাড়া, ইদ্রিস পাড়ার  এলাকার কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘সাঁকোর এপারে স্কুল না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে  ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন আমাদের স্কুলে যেতে হয়।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য  আয়ুব আলী খান বলেন, ওই স্থানে সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঝুকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছে।  দ্রুত সেতু নির্মাণের জন্য দাবী জানাচ্ছি।
গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি মো. মোস্তফা মুন্সী বলেন, এলাকাবাসীর দাবী  ও  জনগণের দুর্ভোগ কমানোর জন্য বাঁশের সাঁকোর  পরিবর্তে  ব্রীজ নির্মাণ করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *