
কুষ্টিয়া মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফকে নেওয়া হয়েছে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে।
বুধবার (০২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার সময় একটি মাইক্রোবাসে ঢাকা থেকে নিয়ে এসে কুষ্টিয়া আদালত জিআরও শাখায় কিছুক্ষণ রেখে জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (০৩ অক্টোবর) এ মামলার শুনানি হবে এজন্য তাকে জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম।
বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়া র্যাব-১২ কার্যালয় থেকে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় কুষ্টিয়া সদর থানায় দায়ের করা সুজন মালিথা হত্যা মামলায় রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে আব্দুর রউফ (৬০) কে গ্রেফতার করেছে র্যাব। আব্দুর রউফ ঐ মামলার এজাহার নামীয় ৮নং আসামী।
গ্রেফতারকৃত আব্দুর রউফ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাশগ্রাম এলাকার মৃত আলহাজ¦ মোকসেদ হোসেনের ছেলে। তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসন থেকে সংসদ সদস্য হন।
র্যাব-১২ জানায়, ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার মোল্লাতেঘরিয়া পূর্ব ক্যানেলের পাড়ে আগ্নেয়য়াস্ত্র দিয়ে টাকিমারা এলাকার ইসমাইল মালিথার ছেলে সুজন মালিথা (৪৫) কে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনার ৫ বছর পরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই হিসাবে শহরের লালন শাহ রোড এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সুজন হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৮। উক্ত মামলায় র্যাব এজাহার নামীয় ৮নং আসামী আব্দুর রউফকে ঢাকা জেলার মিরপুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার সময় গ্রেফতার করে।
এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাত, কুষ্টিয়া মডেল থানার সাবেক ওসি নাসির উদ্দিন, একই থানার সাবেক ওসি এ কে এম মিজানুর রহমান, ওই থানার সাবেক এসআই সাহেব আলী, এসআই মোস্তাফিজুর রহমান, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, দৌলতপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান টোকন চৌধুরী, কুষ্টিয়া নাগরিক পরিষদের সভাপতি এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) চেয়ারম্যান সাইফুদ্দৌলা তরুন, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহিদুল ইসলাম, ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ আরিফুর হোসেন সজীব, কুষ্টিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কৌশিক আহমেদ ওরফে বিচ্ছু, জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি সোহাগ আলী।
উল্লেখ্যঃ ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টার সময় কুষ্টিয়ায় দুইদল মাদক ব্যবসায়ী ও পুলিশের সাথে ত্রিমুখি সংঘর্ষে মাদক ব্যবসায়ী সুজন নিহত হয় বলে জানিয়েছিলেন তৎকালীন কুষ্টিয়া সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, ৩০০টি ইয়াবা ও ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারসহ চারজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
ঘটনার ৫বছর পরে পুলিশের দাবীকৃত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় সুজনকে বিএনপি কর্মী দাবী করে রাজনৈতিক বড় ভাই পরিচয়ে এ ঘটনাকে হত্যা মামলা হিসাবে দায়ের করা হয়।