
কুষ্টিয়া শহরে ওজোপাডিকো’র অবহেলা ও খামখেয়ালিপনায় বিদ্যুৎ স্পর্শে তিন শিশু সন্তানের জননী এক গৃহবধুর মর্মান্তিক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার ভোরে শহরের মাহাতাব উদ্দিন রোড সংলগ্ন রাজু’র কবরের দক্ষিণ পাশের গলিতে এঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম শিরিনা খাতুন(৩০)। তিনি কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দা নির্মান শ্রমিক রফিকুল ইসলামের স্ত্রী। নিহত শিরিনা খাতুন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পিছনে মজিরনের বাড়িতে স্বামী ও ৩ সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
নিহতের স্বামী রফিকুল ইসলামের অভিযোগ,‘আমার স্ত্রী শিরিনা প্রতিদিনের মতো রোবিবার ভোর ৬টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে মেসে রান্নার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে সকাল সাড়ে ৭টার সময় পাশের বাসায় ভাড়া থাকা এক মহিলা দৌড়ে এসে বিদ্যুতের খুটিতে স্পর্শ করে শক খাওয়ার সংবাদ শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি বিদ্যুতের খুঁটির পাশে উল্টে পড়ে আছে শিরিনা। সেখানে প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাকে ঘটনা খুলে বলে। এই যে বিদ্যুতের খুটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ হলি কি করি ? বিদ্যুতের অফিসারের কি চোখে পড়েনা এই সমস্যা ? আমার মাসুম শিশু বাচ্চাদের এতিম করে দিলো। এর জন্যি দায়ি কিডা ? আমি এর বিচার চাই।
ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষদর্শী রিনা খাতুন(৫৫) জানায়, রাত্রি অনেক বৃষ্টি হওয়ায় রাজুর কবরের গলির মধ্যে পানি জমে ছিল। সেজন্যি পানির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্যুতের খুঁটির সাথে স্পর্শ হতেই শিরিনা ছটফট করে রাস্তায় পড়ে যায়। এই অবস্থায় এলাকাবাসী বিদ্যুৎ স্পৃষ্টের বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগকে জানায়। আধা ঘন্টা পর বিদুতের লোক ঘটনাস্থলে এসে শিরিনার লাশ উদ্ধার করে।
এবিষয়ে ওজোপাডিকো লি: কুষ্টিয়ার বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরাও প্রথমে শুনেছি, বিদ্যুতের খুটির সাথে স্পর্শ হয়ে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার দিন রাতে প্রচুর বৃষ্টি হয়ে সেখানে পানি জমে ছিলো, প্রাথমিক ধারণা করেছিলাম যে ওই খুটির লেগে থাকা সার্ভিস তারে কোথাও লিক হয়ে পানি সংযোগে সিমেন্টের ওই পিসি পোলে বিদ্যুতায়িত হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা পরিক্ষা করে অভিযোগের কোন সত্যতা পায়নি। আমরা ওই খুটিতে টেষ্ট করে কোন বিদ্যুতায়নের প্রমান পায়নি। কিন্তু স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি যে ওই খুটির সাথে স্পর্শ করে বিদ্যুৎ সক খেয়ে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তবে যেটাই ঘটুক পরিবারটি খুবই গরীব অভাবী, ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য কিছু আর্থিক সাহায্যের জন্য আমাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করি ওই পরিবারকে আমরা কিছু আর্থিক সাহায্য দিতে পারবো।